শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিংনিউজ-
ইসকন ‘ভারতের র’র কর্মকাণ্ডে জড়িত’: অভিযোগ সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম বিএনপি-জামায়াতের চোখে বিতর্কিত অন্তর্বর্তী সরকার উপদেষ্টারা গাজীপুরে নিখোঁজ ইমাম মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মাদানী পরিবারের হাতে ফিরেছেন কর্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগকে নির্বাচনে নিতে বিদেশি চাপ বারছে: প্রেস সচিব ভোটকেন্দ্রে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হবেন ৬ লাখ আনসার সদস্য: ডিজি সাজ্জাদ মানবতাবিরোধী মামলার ১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে: প্রথম দিন কেমন কাটল দাঁড়িয়ে থাকা বাসের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২, আহত ৫ যে আসনে বিজয়ী প্রার্থীর দল সরকার গঠন করে: সিলেট-১ আসনে উত্তাপ বাড়ছে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে চোটে জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকা
Headline
Wellcome to our website...
জায়োনবাদী পরিকল্পনাকে যেভাবে উসকে দিলেন ট্রাম্প
প্রকাশ কাল | মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৭:৪২ অপরাহ্ন

তিয়েরি ব্রেজিলিয়াঁ:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব, গাজার ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে জর্ডান বা মিশরে পুনর্বাসিত করা হোক, যাতে অঞ্চলটি ‘একেবারে পরিষ্কার’ করা যায়। তার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এমনকি গাজার কিছু বাসিন্দাকে ইন্দোনেশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

ইসরায়েলের সাবেক কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির ট্রাম্পের এ প্রস্তাবের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। এক্স প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘যখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই এই ধারণা উপস্থাপন করেন, তখন এটি বাস্তবায়ন করা ইসরায়েলি সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখনই অভিবাসনকে উৎসাহিত করা উচিত।’

এই জাতিগত নির্মূল পরিকল্পনা ইহুদি উপনিবেশ সম্প্রসারণের পথ সুগম করবে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ট্রাম্প দীর্ঘমেয়াদি জায়োনবাদী আন্দোলনের পথেই এগোচ্ছেন। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে, ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থীদের যুদ্ধের যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছেন।

জায়োনবাদীদের উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আবার উপনিবেশ স্থাপন করা। তাদের মতে, এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য আর গাজার বাসিন্দাদের জন্যও তা হবে উত্তম সমাধান। তাদের অনেকে বলেন, গাজাবাসীরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে বাস করেন। অথচ অনেক দেশে শ্রমিকের চাহিদা আছে। তারা চলে গেলে তো ভালো থাকবেন।

জায়োনবাদী পার্টির নেতা ইসরায়েলি সংসদ সদস্য জিভ সুকোট আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘যেসব দেশ নৈতিকতার মুখোশ পরে গাজার মানুষদের নিয়ে উদ্বিগ্নতা দেখায়, তারা যেন এই ফিলিস্তিনিদের নিজেদের দেশে নিয়ে যায়। যদি তারা গাজার বাসিন্দাদের এতটাই ভালোবাসে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকাই–বা কেন তাদের আশ্রয় দিচ্ছে না?’

গাজায় ১ লাখ আরব, ২০ লাখ নয়

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ কোনো লুকোছাপা না করেই ঘোষণা করেন, ‘গাজা উপত্যকায় অভিবাসনকে উৎসাহিত করা দরকার। গাজায় এক লাখ বা দুই লাখ আরব থাকতে পারে, কিন্তু ২০ লাখ কোনোমতেই না।’

এ ধারণা এখন ইসরায়েলি জনপরিসরে আলোচনার অংশ হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালের শুরুতে একটি জরিপ করা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘আপনি কি গাজা উপত্যকার অধিবাসীদের অন্য দেশে স্বেচ্ছা অভিবাসনের পক্ষে নাকি বিপক্ষে?’ উত্তরে ৭৬ শতাংশ ব্যক্তি পক্ষে মত দেন। কী পরিহাস! ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যত নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ইসরায়েলি নাগরিকদের। অথচ ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই!

আরবদের সরিয়ে দিয়ে গাজা, পশ্চিম তীর, এমনকি সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং লেবাননের লিটানি নদীর দক্ষিণ তীর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিখুঁত ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের বাসনা নতুন কিছু নয়। যে সহিংসতা ব্যবহার করে গাজার জনসংখ্যাকে না খাইয়ে মারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পূর্ণ অবকাঠামো পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে এবং উত্তর গাজায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও নির্মূল করা হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসন কথাটার মতো নিষ্ঠুর আর কী হতে পারে!

অভিবাসন ছাড়া আর কোনো বিকল্প না রাখা

এ চিন্তার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ১৯৩৭ সালে। ব্রিটিশ সরকার আরব বিদ্রোহের (১৯৩৬) পরিপ্রেক্ষিতে পিল কমিশন গঠন করে। এই কমিশন একদিকে ফিলিস্তিনকে দুই রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব দেয়; অন্যদিকে আরব জনগণকে ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত ভূখণ্ড থেকে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা তৈরি করে। তবে জায়োনবাদীরা ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসন বলতে ফিলিস্তিনিদের নিজের ইচ্ছায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বোঝাননি, বরং তারা এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন, যাতে আরবদের সামনে অভিবাসন ছাড়া আর কোনো বিকল্পই না থাকে।

ফিলিস্তিনে জায়োনবাদী নেতা জেনারেল ইয়েহোশুয়া সফেরস্কি প্রস্তাব করেছিলেন, ‘যদি নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কৃষি আইন করে বড় আরব জমিদারদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আরবদের জমি কেনা নিষিদ্ধ করা যায়, তাহলে অধিকাংশ আরব ফিলিস্তিন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবে।’ অন্যদিকে আরেক কট্টর দল ‘কনেসেট ইয়িসরায়েল’-এর নেতা এলিয়াহু বার্লিনে পরামর্শ দেন, ‘কর বাড়ানো উচিত, যাতে আরবরা করের চাপে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’

এই নীতির মাধ্যমে জায়োনবাদীরা তাদের নাগরিকদের সম্মতি আদায় করতে চেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন আরব নেতাদের রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে এই পরিকল্পনায় সহযোগী করে তুলেছিল। এই নেতাদের মধ্যে অন্যতম ট্রান্সজর্ডানের আমির আবদুল্লাহ ইবনে আল-হুসেইন, ইরাকের রাজা ফয়সাল ইবনে আল-হুসেইন।

আরেকটি পরিকল্পনা ছিল ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের ইরাকের উর্বর উপত্যকা ‘শাত-আল-ঘারাফ’ অঞ্চলে পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। তাহলে ইউরোপ থেকে আগত বিপুলসংখ্যক ইহুদির জন্য ভবিষ্যতে এই জমি কাজে লাগবে। এই পরিকল্পনাগুলোর কিছু ‘মানবিক’ প্রচেষ্টা হিসেবে উপস্থাপিত হলেও আসলে এগুলোর বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ফিলিস্তিনিরা ইতোমধ্যে বুঝতে পেরেছিল যে জায়োনবাদ একটি ঔপনিবেশিক প্রকল্প। দেশ ছেড়ে যাওয়ার অর্থ হবে নিজেদের পরিচয় ও মাতৃভূমি বিসর্জন দেওয়া।

১৯৪১ সালে আরেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়ন বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলের ভূমি হলো বিশাল আরব অঞ্চলের একটি ক্ষুদ্র অংশমাত্র। আর এই ভূমিতে বসবাসকারী আরবরা বৃহত্তর আরব জাতির তুলনায় তুচ্ছ এক জনগোষ্ঠী।’ এটি জায়োনবাদী দৃষ্টিভঙ্গির খাঁটি দৃষ্টান্ত। তারা ফিলিস্তিনি আরবদের নিজের ভূমিতে থাকাটা মেনে নিতে পারে না।

১৯৪৭ সাল থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা শুরু হয়। এভাবে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল ও প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধ বাধে। এ যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে জায়োনবাদীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের তিন-চতুর্থাংশ আরব জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করা হয়।

এরপর ইসরায়েলি প্রচারণা একটি নতুন মিথ তৈরি করে। আরব নেতারাই নাকি ফিলিস্তিনিদের দেশ ছাড়তে বলেছিলেন, যাতে তারা সামরিক অভিযানের জন্য জায়গা পান এবং পরে বিজয়ের পর ফিরে আসতে পারেন। এই একই প্রক্রিয়া আজও অব্যাহত রয়েছে ভিন্ন নামে এবং ভিন্ন কৌশলে। ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসন সেই কৌশলেরই একটি।

১৯৬৭ সালের পর গাজা খালি করার পরিকল্পনা

১৯৬৭ সালের দখলদারির পর ইসরায়েলি শাসকদের কাছে আবারও ‘আরব সমস্যা’ নতুন করে সামনে আসে, বিশেষ করে গাজা উপত্যকায়। ইসরায়েলি নেতৃত্ব তখন আবারও ‘স্বেচ্ছা অভিবাসন’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। এর লক্ষ্য ছিল যাতে গাজায় মাত্র ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনি রেখে অন্যদের সিনাই মরুভূমি বা জর্ডানে পাঠানো যায়।

সে সময়ের ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী লেভি ইশকোলের পরিকল্পনা ছিল এমনভাবে একটি নীরব অভিবাসন ঘটানো, যেন বোঝা না যায় যে ইসরায়েল সরাসরি এতে জড়িত। এই লক্ষ্যে আরব সমাজ সম্পর্কে জানতেন এমন ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সরাসরি গাজার জনগণের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যাতে তারা স্থানীয় নেতাদের বোঝাতে পারেন যে গাজা ছেড়ে গেলেই তাদের জন্য ভালো হবে। ইশকোল মনে করতেন, ‘এই দমবন্ধ করা পরিবেশ ও সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো আরবরা গাজা ছেড়ে চলে যেতে রাজি হবে।’

কিন্তু গাজার ফিলিস্তিনিরা এ প্রচেষ্টায় মোটেই সাড়া দেয়নি।

১৯৭১ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে দায়ান এই ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসনের আরও কঠোর সংস্করণ তৈরি করেন। তিনি নির্দেশ দেন, ‘আমরা তাদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দিই। আমরা তাদের বলতে পারি যে তোমাদের সিনাইয়ে বা অন্য কোথাও যেতে হবে, আমরা তোমাদের নিয়ে যাব। প্রথমে আমরা তাদের স্বেচ্ছায় যাওয়ার সুযোগ দেব। আমরা তাদের বাড়ির আসবাবও সরিয়ে দিতে সাহায্য করব।’

মোশে দায়ানের প্রস্তাব এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেছিলেন, যদি কেউ এসে তাদের জিনিসপত্র গোছানোর ব্যবস্থা না করে, তাহলে বুলডোজার এনে বাড়ি গুঁড়িয়ে দিতে হবে। যদি কেউ বাড়ির ভেতরে থাকে, তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হবে। যেহেতু তাদের আগেই ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে, তাই কোনো নীতিগত সংকট তৈরি হবে না। তার মতে, এভাবে তাদের জিনিসপত্র ট্রাকে তুলে পাঠিয়ে দিতে পারলে তা স্বেচ্ছা অভিবাসনের মতোই দেখাবে।

স্থানান্তর নীতি

এতক্ষণ যে আলোচনা করা হলো, তাতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের এ ধারণা মোটেই নতুন কিছু নয়। ঐতিহাসিক পর্যালোচনা দেখাচ্ছে যে তথাকথিত ‘স্বেচ্ছা অভিবাসন’ ধারণার নিরবচ্ছিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ ধারণা যাকে অভিবাসিত করার কথা বলছে, তার অস্তিত্বই স্বীকার করে না। তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি কোনো সম্মানের তো প্রশ্নই ওঠে না।

ফিলিস্তিনিদের বলা হয় সরে যেতে। কারণ কী? কারণ হলো এই যে জায়োনবাদীরা মনে করে ইহুদিরা শ্রেষ্ঠ, ফিলিস্তিনিদের চেয়ে উচ্চস্তরের। এই ‘শ্রেষ্ঠত্ব’ বাস্তবায়ন করাই তথাকথিত ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসনের উদ্দেশ্য। আর কী আশ্চর্য, যুদ্ধ ও নির্যাতনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নিজ দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে ‘নির্যাতিত ইহুদিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরিতে’।

এই ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসন ধারণা যে ঠিক, তা প্রমাণ করার জন্য ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার দায়ও তাদের ওপর চাপানো হয়। যদি তারা নিজ দেশ ছেড়ে না যায়, তাহলে তাদের ওপর চেপে বসা যুদ্ধ, মৃত্যুর জন্য তাদেরই দায়ী করা হয়। এরপর দোষ চাপানো হয় আরব রাষ্ট্রগুলোর ওপর। বলা হয়, তারা কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং ইসরায়েলের প্রতি শত্রুতা থেকে শরণার্থীদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করছে। পরবর্তী পর্যায়ে দায়ভার স্থানান্তরিত হয় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার মতো সংস্থাগুলোর ওপর।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ সংস্থাটিকে ইসরায়েল অভিযুক্ত করে আসছে শরণার্থী সমস্যাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য। ইসরায়েল এ সংস্থাকে তার অস্তিত্বগত হুমকি হিসেবে দেখে। এ কারণেই ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের এক নতুন আইনের মাধ্যমে সংস্থাটিকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়।

এই ‘স্বেচ্ছা’ অভিবাসনের কল্পিত ধারণা একদিকে একটি জনগোষ্ঠীকে তার ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার প্রকল্পকে নৈতিকভাবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করে, অন্যদিকে দখলদারদের জন্য নৈতিক স্বচ্ছতা বজায় রাখার সুবিধাও দেয়। কিন্তু বাস্তবে এটি জোর করে স্থানান্তর করা ছাড়া আর কিছু নয়।

১৯৭০ সালে যখন গাজার ফিলিস্তিনিরা দেশ ছাড়তে অস্বীকার করেছিল, তখন ইসরায়েলের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী জোরাখ ওয়ারহাফটিগ প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ারকে বলেছিলেন, ‘যদি শক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তবে সেটা করা উচিত। তবে শক্তি প্রয়োগ করতে হবে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে।’

এবারও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজাকে ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে ‘নরকে’ পরিণত করার পরও সেখানকার মানুষ ‘স্বেচ্ছায়’ তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে যেতে রাজি হয়নি।

বরাবরের মতোই যা দরকার, তাহলো একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধান তৈরি করা। আর তা না হলে গাজা দখল ও অধিকাংশ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপন করার পরিকল্পনা ইসরায়েলের রাজনৈতিক মহলের বিশাল অংশের মধ্যে রয়ে যাবে। আর এটাই ইহুদি বসতি স্থাপনকারী সংগঠনগুলোর চূড়ান্ত লক্ষ্য। ভবিষ্যতে কোনো সংকট দেখা দিলে এই নীতি কৌশলগত বাস্তবায়নের রূপ নিতে পারে। ঠিক এই পরিকল্পনাই ইসরায়েলি সরকার ও সেনাবাহিনী উত্তর গাজায় তাদের সাম্প্রতিক যুদ্ধ অভিযানের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন শুরু করেছে।

মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া, ঈষৎ সংক্ষেপিত অনুবাদ জাভেদ হুসেন

এই পাতার আরো খবর
Our Like Page