
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি (২৬ জুন, ২০২৫) তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করেছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্রই নেতানিয়াহুকে রক্ষা করবে।” এই মন্তব্যের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে:
১. নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি মামলা: ইসরায়েলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে। ট্রাম্প এই বিচারকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক তাণ্ডব’ বলে অভিহিত করেছেন এবং মনে করেন, নেতানিয়াহুর মতো একজন “মহান নায়ককে” ক্ষমা করে দেওয়া উচিত, যিনি দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। ট্রাম্প নিজে একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন এবং সেগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর প্রতি তাঁর সহানুভূতি বা সমর্থন প্রকাশ করছেন।
২. ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা: সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার হস্তক্ষেপে ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা বন্ধ করেছে এবং একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিনি সম্ভবত ইসরায়েলের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের “গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা” এবং বিশেষত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ ও সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলকে এই ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।
৩. ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং মিত্রতা: ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ। ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ‘একজন যোদ্ধা’ এবং ‘বুদ্ধিমান ও শক্তিশালী’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। তারা একসঙ্গে “নরক পার করেছেন” বলেও ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, যা তাদের গভীর মিত্রতার ইঙ্গিত দেয়।
৪. রাজনৈতিক সমর্থন: ট্রাম্প সম্ভবত এই মন্তব্যের মাধ্যমে ইসরায়েলপন্থী ভোটার এবং রক্ষণশীলদের সমর্থন আদায় করতে চাইছেন, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে।
সংক্ষেপে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যটি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া থেকে তাকে রক্ষা করার ইচ্ছা, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব দেখানো এবং নেতানিয়াহুর সাথে তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে তুলে ধরার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।