
পবিত্র আশুরা আগামী ৬ জুলাই উদযাপিত হবে। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও শোকাবহ দিন। প্রতি বছর হিজরি সনের মহররম মাসের দশম দিনে আশুরা পালিত হয়।
আশুরার তাৎপর্য
আশুরা ইসলামের ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা, যেখানে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে শাহাদাতবরণ করেন। এই দিনে মুসলমানরা ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর সঙ্গীদের আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ইসলাম পূর্ব যুগ থেকেই আশুরার বিশেষ তাৎপর্য ছিল। বিভিন্ন ঐশী ঘটনা এই দিনের সাথে জড়িত। যেমন:
* হযরত নূহ (আ.)-এর মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি।
* হযরত মূসা (আ.)-এর ফেরাউনের অত্যাচার থেকে বনি ইসরাইলকে উদ্ধার এবং ফেরাউনের সলিল সমাধি।
* হযরত আইয়ুব (আ.)-এর রোগমুক্তি।
* হযরত ইউনুস (আ.)-এর মাছের পেট থেকে মুক্তি।
এসব কারণে আশুরার দিনে রোজা রাখার প্রচলন ছিল, যা পরবর্তীতে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর সুন্নত হিসেবে পরিগণিত হয়।
উদযাপন ও করণীয়
আশুরার দিনে মুসলমানরা বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর মাধ্যমে দিনটি পালন করে। এর মধ্যে রয়েছে:
* নফল রোজা: অনেকেই আশুরার দিনে এবং এর আগে বা পরে (৯ ও ১০ মহররম অথবা ১০ ও ১১ মহররম) দুটি রোজা রাখেন।
* ইবাদত-বন্দেগী: নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার এবং দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা হয়।
* তাজিয়া মিছিল: শিয়া মুসলমানরা ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতকে স্মরণ করে শোক মিছিল বা তাজিয়া বের করেন।
* দান-সদকা: গরীব-দুঃখীদের মাঝে দান-সদকা করা হয়।
এই দিনে মুসলমানদের উচিত কারবালার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা। পবিত্র আশুরা মুসলিম বিশ্বে শান্তি, সম্প্রীতি ও ত্যাগের মহিমা স্মরণ করিয়ে দেয়।