
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিক্কি) আয়োজিত ‘নিউ এজ মিলিটারি টেকনোলজিস: ইন্ডাস্ট্রি ক্যাপাবিলিটিজ অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর. সিং। তিনি জানান, গত মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় চীন ইসলামাবাদকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থান সম্পর্কে ‘লাইভ ইনপুট’ বা তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, এ সংঘর্ষে ভারত একসঙ্গে দুই পক্ষের মোকাবিলা করেছে—পাকিস্তান সরাসরি সম্মুখভাগে ছিল, আর চীন থেকে আসছিলো সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা। এজন্য তিনি ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে আধুনিকায়নের ওপর জোর দেন।
গত এপ্রিলে কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং আর্টিলারি ব্যবহৃত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে।
জেনারেল সিং জানান, ডিজিএমও পর্যায়ের আলোচনায় পাকিস্তান জানিয়েছিল, “আমরা জানি, আপনারা অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত।” এর মাধ্যমে বোঝা যায়, চীন থেকেই পাকিস্তান ‘লাইভ ইনপুট’ পেয়েছে। তবে ভারত কীভাবে এই তথ্য শনাক্ত করেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এই অভিযোগের পর চীন বা পাকিস্তান পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২০ সালে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার পর সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়, যদিও ২০২৩ সালের অক্টোবরে সেনা প্রত্যাহারের পর কিছুটা স্থিতি ফিরে আসে।
পূর্বে ভারত জানিয়েছিল, চীন পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও সরাসরি সংঘর্ষে চীনা সহায়তার প্রমাণ মেলেনি। তবে পাকিস্তান স্যাটেলাইট ইমেজ বা রাডার ডেটা পেয়েছে কি না, তা নিয়ে ভারত মুখ খুলেনি।
জেনারেল সিং আরও বলেন, তুরস্ক পাকিস্তানকে বায়রাক্টার ড্রোন, সামরিক সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সংঘর্ষের সময় তুরস্ক প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিলে ভারতের জনগণ তুরস্কের পণ্য বয়কট করে।
চীন মে মাসে যুদ্ধবিরতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে, যা সংকটে থাকা পাকিস্তানের প্রতি চীনের বিনিয়োগ ও আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেয়। পরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে দেশটির ‘সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায়’ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি চীন সত্যিই পাকিস্তানকে রিয়েল-টাইম গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে থাকে, তাহলে এটি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও অস্থির করে তুলতে পারে।o