বিমান দুর্ঘটনায় সারাদেশ স্তব্ধ, নিহতদের পরিবারকে কী জবাব দেব—প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় সারাদেশ আজ শোকাহত ও বিস্মিত। “এটি কারও কল্পনায় ছিল না। আমরা নিজেদের প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না, নিহতদের পরিবারকে কী বলবো?”— এমন বেদনা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২১ জুলাই) এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমার বলার কোনো ভাষা নেই। এখনও হাসপাতালে আহতরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, অনেক মা-বাবা এখনো সন্তানকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা তদন্ত করা হবে, তবে যারা চলে গেছে—তারা আর ফিরে আসবে না।”
তিনি জানান, আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসাকাজ ব্যাহত না করতে অযথা হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, যেন সবাই আহত ও নিহতদের জন্য দোয়া ও প্রার্থনায় অংশ নেন।
এদিকে, উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৭১ জন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান জানান, নিহতদের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। আহতদের অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী এবং ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই দুর্ঘটনায় সরকার মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এদিন দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একইভাবে, সব সরকারি-বেসরকারি ভবন ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনেও পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। সেই সঙ্গে নিহত ও আহতদের জন্য দেশের ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-সেভেন বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
