
গাজাবাসী ফিলিস্তিনিরা বিমান থেকে প্যারাসুটে মানবিক সহায়তা ফেলার ঘটনাকে অপমানজনক বলে নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই পদ্ধতি তাদের মানবিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এমন আচরণকে তারা অবমাননাকর বলে মনে করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আহমেদ ফায়েজ ফায়াদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আমরা কুকুর নই যে খাবারের জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকব বা এক টুকরো রুটির জন্য লড়াই করব। আমাদের দরকার মানুষের মতো বেঁচে থাকার অধিকার, মর্যাদার সঙ্গে।”
একজন ফিলিস্তিনি মা, যিনি তিন দিন ধরে পরিবারে খাবার জোগাড়ে ব্যর্থ হয়েছেন, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার শিশু ক্ষুধায় কাঁদে, আর আমি অপমান সহ্য করি। আমাদের অধিকার চাই — বেঁচে থাকার ন্যায্য অধিকার।”
কেন এই তীব্র প্রতিক্রিয়া?
বিমান থেকে ফেলা বেশিরভাগ ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না নির্দিষ্ট স্থানে—অনেক সময় তা সমুদ্রে পড়ছে বা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় গিয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করছে। এমনকি মাটিতে পড়ে ত্রাণের প্যাকেট ভেঙে নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন, প্যারাসুটে ত্রাণ ফেলা আসলে এক ধরনের “দেখানোর জন্য করা প্রদর্শন”, যার প্রকৃত উপকার কম।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বলছে, এই ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতি শুধু অকার্যকর নয়, বরং গাজাবাসীর মানসিক অবস্থাকে আরও দুর্বল করে তুলছে।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এটা কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। একমাত্র বাস্তব সমাধান হলো অবরোধ তুলে নিয়ে, গাজায় প্রত্যেক পরিবার পর্যন্ত স্থলপথে পর্যাপ্ত সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।”
এই প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের নেতৃত্ব এখন জোরালোভাবে প্রশ্ন তুলছেন: “আমরা ভিক্ষুক নই। চাই নিরাপদ জীবন, সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি কেবল খাবার ফেলবে, নাকি আমাদের মর্যাদাও ফিরিয়ে দেবে?”