
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবিতে মুরাদনগরে বিক্ষোভ, নানা অভিযোগে উত্তপ্ত স্থানীয় জনতা
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুরে ট্রিপল মার্ডার, স্কুল শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুকুর দখলসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তার বাবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৫টায় মুরাদনগর উপজেলা সদরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার সাধারণ মানুষ।
বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল চলাকালে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলে এলাকা—“এক-দুই-তিন-চার, আসিফ তুই গদি ছাড়”, “হাসিনা গেছে যেই পথে, আসিফ যাবে সেই পথে”, “বাপে ছেলে মিল্যা, মুরাদনগর খাইছে গিল্যা”—এমন নানা স্লোগানে আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবি তোলে তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন—
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, “মুরাদনগরে এখনো ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের প্রভাব রয়েছে আসিফ মাহমুদের ছত্রছায়ায়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি আমাদের নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ দাদার কর্মী শাহ আলমকেও গুমের চেষ্টা করা হয়েছে।”
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খায়রুল আহসান প্রশ্ন তোলেন, “একজন স্কুল শিক্ষক হয়ে উপদেষ্টার বাবা কীভাবে বিলাসবহুল গাড়িতে চলাফেরা করেন? তিনি কী কোনো মন্ত্রী? আকুবপুরে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মামলার এক নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা শিমুল বিল্লাহর সঙ্গে তার গোপন বৈঠক।”
পূজা উদ্যাপন কমিটির সহ-সভাপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, “গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত তিনটি পূজা মণ্ডপে হামলা হয়েছে, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধও ঘটেছে। কিন্তু আসিফ মাহমুদের ইশারায় সঠিক বিচার পাইনি। এমন অবস্থায় আমরা আর সহ্য করব না, প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “গীতা রাণী রায় নামের এক হিন্দু শিক্ষিকাকে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে স্কুল থেকে তাড়ানো হয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিল আসিফ মাহমুদের বাবা। শান্ত মুরাদনগরকে তার পরিবার এবং আওয়ামী কর্মীদের দিয়ে অশান্ত করে তোলা হয়েছে।”
বক্তারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলমকে কালো গাড়িতে তুলে নেয়ার অভিযোগও তোলেন এবং এসব ঘটনার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
শেষে বিক্ষোভকারীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে আহ্বান জানান—উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।