
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্সসহ অন্তত ১৫টি পশ্চিমা দেশ। নিউইয়র্কে ১৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক সম্মেলন শেষে যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক পথকে পুনরুজ্জীবিত করতেই ফ্রান্স ও সৌদি আরব এই সম্মেলনের উদ্যোগ নেয়।
সম্মেলনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো বলেন, “এই সম্মেলন থেকে ফ্রান্সসহ ১৪টি দেশ সম্মিলিতভাবে একটি বার্তা দিয়েছে—আমরা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী এবং যারা এখনো স্বীকৃতি দেয়নি, তাদেরও এতে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এর আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। তবে এই ঘোষণার পর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে প্যারিস।
তবে ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী একটি গঠনমূলক গতিশীলতা তৈরি করবে, যা ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পথে সহায়ক হবে।
এদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও একই রকম বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল যদি সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে যুক্তরাজ্যও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য হবে প্রথম দুটি জি-৭ দেশ, যারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স, সৌদি আরব, স্পেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড নিজেদের দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে অটল থাকার বার্তা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
তবে ওই ১৫ দেশের মধ্যে ৯টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড রয়েছে। তারা জানিয়েছে, স্বীকৃতির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে।
এছাড়া নিউইয়র্ক সম্মেলনে আরও ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আরব লিগ—হামাসকে অস্ত্রত্যাগ ও গাজার শাসন পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে। চলমান সংঘর্ষের অবসান এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে হামাসকে এই আহ্বান মেনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই সাম্প্রতিক পশ্চিমা প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।