
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান মন্তব্য করেছেন, “শুধু শেখ হাসিনার দেশত্যাগই আমাদের একমাত্র প্রাপ্তি হতে পারে না। যদি একটি নতুন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা না যায়, তাহলে এই অভ্যুত্থান সফলতা অর্জন করবে না।” বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের ১২টি মৌলিক প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু তার অধিকাংশই পূরণ হয়নি। বরং পুরনো ফ্যাসিবাদী কাঠামোই এখনো বহাল রয়েছে।
তার ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো—
সরকারের কাছে ১ বছরে যেসব পরিবর্তনের প্রত্যাশা ছিল, অথচ হয়নি:
১. দেশজুড়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি থাকলেও, বরং তাদের বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন করা হয়েছে।
২. শেখ পরিবারের কেউ এখনো আইনের আওতায় আসেনি।
৩. জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৬ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও দায়ীদের বিচার হয়নি।
৪. প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তারা ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার সহায়ক ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
৫. পুলিশ ও প্রশাসনে কোনো কাঠামোগত সংস্কার হয়নি—ঘুষ, দুর্নীতি ও তদবির এখনো বহাল।
৬. এনএসআই ও ডিজিএফআই-এর মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অপব্যবহার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে কোনো জবাবদিহি হয়নি।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের ক্যাডার থেকে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
৮. গত ১৬ বছরে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়নি।
৯. সরকার-অনুগত মিডিয়া এবং সেই মিডিয়ায় কর্মরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
১০. বিচারব্যবস্থা, সচিবালয়, বিভিন্ন দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনে আওয়ামী প্রভাব এখনো বজায় রয়েছে।
১১. দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মের জন্য কোনো মনস্তাত্ত্বিক পুনর্গঠন বা কাউন্সেলিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
১২. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কাঠামোগত সংস্কার বা আমূল পরিবর্তনের কোনো প্রচেষ্টা দেখা যায়নি।
তিনি মন্তব্য করেন, উপরিউক্ত প্রত্যাশাগুলো পূরণ না হওয়ায় প্রমাণ হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রে এখনো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিদ্যমান। কাজেই, শুধু একজন ব্যক্তির দেশত্যাগ নয়—একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের মধ্য দিয়েই এই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত সফলতা নিশ্চিত হতে পারে।