
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে সাংবাদিকদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে অবস্থানকালে তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
নিহতরা হলেন—প্রতিবেদক আনাস আল-শরীফ ও মোহাম্মদ কুরাইকেহ এবং ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল ও মোয়ামেন আলিওয়া। আল জাজিরা এই ঘটনাকে সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর পরিকল্পিত ও প্রকাশ্য হামলা এবং ‘টার্গেটেড অ্যাসাসিনেশন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তারা আনাস আল-শরীফকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, কারণ তিনি নাকি হামাসের সশস্ত্র সেলের প্রধান ছিলেন। তবে নিহত অন্য চার সাংবাদিকের বিষয়ে কিছু বলেনি। আল জাজিরার হিসাবে, এই হামলায় মোট সাতজন নিহত হয়েছেন।
আল জাজিরার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ মোয়াওয়াদ বলেন, আল-শরীফ একজন অনুমোদিত সাংবাদিক ছিলেন এবং গাজার বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অন্যতম কণ্ঠস্বর। “তারা ফ্রন্টলাইনে ছিলেন না, সাংবাদিকদের তাঁবুতেই ছিলেন। ইসরায়েল গাজার ভেতরের সংবাদ কাভারেজ বন্ধ করতে চায়—এটি তারই প্রমাণ।”
আইডিএফ দাবি করেছে, আল-শরীফ সাংবাদিক সেজে কাজ করছিলেন এবং বেসামরিক নাগরিক ও সেনাদের ওপর রকেট হামলায় জড়িত ছিলেন। সেনাবাহিনী আরও জানায়, হামলার আগে নির্ভুল অস্ত্র, আকাশ থেকে নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য।
জাতিসংঘ, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এবং আল জাজিরা আগেই আল-শরীফের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। আল জাজিরা অভিযোগ করেছে, গাজায় তাদের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইডিএফ ধারাবাহিকভাবে ‘উসকানিমূলক প্রচারণা’ চালিয়ে আসছে।
সিপিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১৮৬ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।