
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রাজধানীর পূর্বাচলে মা, ভাই ও বোনকে অনিয়মের মাধ্যমে প্লট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে বিচারাধীন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বিচার প্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ ও ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
টিউলিপ লিখেছেন, “ঢাকায় বর্তমানে যে তথাকথিত বিচার চলছে, তা বানানো অভিযোগের ভিত্তিতে সাজানো এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দ্বারা পরিচালিত। গত এক বছরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ বারবার পরিবর্তিত হলেও বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ একবারও আমার বা আমার আইনজীবী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি কখনও আদালতের সমন পাইনি, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উত্তরও পাইনি।”
তিনি আরও বলেন, “যদি এটি একটি সঠিক আইনি প্রক্রিয়া হতো, তাহলে প্রমাণ উপস্থাপন করা হতো, আমাদের আনুষ্ঠানিক চিঠির উত্তর দেওয়া হতো এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করত। কিন্তু এর বদলে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে, যা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে জানানো হয়নি।”
টিউলিপ জানান, তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে লন্ডন সফরের সময় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, “আমি কোনো ভুল করিনি এবং আমার কাছে উপস্থাপন করা যেকোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের জবাব দিতে প্রস্তুত।”
দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাদের সন্তানদের নামে মোট ছয়টি প্লট বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে একটি শেখ হাসিনার নিজের নামে, একটি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে এবং একটি তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে। অন্যদিকে শেখ রেহানার নামে একটি, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নামে একটি এবং তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে আরেকটি প্লট বরাদ্দ আছে। যদিও টিউলিপের নামে কোনো প্লট নেই, তবে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি প্রভাব খাটিয়ে তার মা, বোন ও ভাইকে প্লট পাইয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশে আসামি বা বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় এ বিষয়ে টিউলিপের তেমন কোনো শঙ্কা নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।