
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি একটি বিতর্কিত “গ্রেটার ইসরাইল” মানচিত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননের ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানচিত্র প্রকাশের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি জর্ডান ও সৌদি আরবও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিশেষ করে জর্ডান এখন সরাসরি যুদ্ধ প্রস্তুতির পথে অগ্রসর হচ্ছে।
তিন দশক পর পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে জর্ডানের জাতীয় সামরিক পরিষেবা কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ক্রাউন প্রিন্স দ্বিতীয় হোসেন বিন আব্দুল্লাহ এক বৈঠকে বলেন, তরুণদের সর্বদা দেশের সেবা ও প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও জানান, এই উদ্যোগ জাতীয় পরিচয়, শৃঙ্খলা ও মাতৃভূমির সঙ্গে তরুণদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবে।
এর আগে ৩০ বছর আগে চালু থাকা এই কর্মসূচির আওতায় ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষদের দুই বছরের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা করতে হতো। ২০২০ সাল থেকে কেবল বেকার তরুণদের জন্য এক বছরের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন কর্মসূচির অধীনে ২০০৭ সালে জন্ম নেওয়া তরুণরা, যারা আগামী জানুয়ারিতে ১৮ বছরে পা দেবে, প্রথম পর্যায়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। প্রাথমিকভাবে ৬ হাজার তরুণকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং শিগগিরই তা ১০ হাজারে উন্নীত করা হবে।
কৌশলগত হুমকি
জর্ডানের এই সিদ্ধান্তের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে:
১. সিরিয়ার অস্থিরতা – বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংকট জর্ডানেও প্রভাব ফেলতে পারে।
২. ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু সংকট – পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করা হলে জর্ডানের জন্য তা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
৩. গ্রেটার ইসরাইল পরিকল্পনা – নেতানিয়াহুর ঘোষিত মানচিত্রে জর্ডানকে অন্তর্ভুক্ত করা সরাসরি দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত, যা নিরাপত্তা সংকট আরও বাড়াচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জর্ডান এখন গুরুতর বহিরাগত হুমকির মুখোমুখি। টিকে থাকতে হলে অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা জরুরি। ফিলিস্তিনে চলমান সংঘাত, গাজায় ইসরাইলি হামলা এবং গ্রেটার ইসরাইল মানচিত্র প্রকাশের প্রেক্ষাপটে জর্ডানের এই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।