
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি মার্কিন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার (২৪ আগস্ট) তেহরানের এক মসজিদে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না। তার এ বক্তব্য পরে খামেনির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
খামেনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। গত জুনে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো হামলার বিষয়টি তিনি সেই পরিকল্পনার অংশ বলে উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, হামলার পরদিনই ইউরোপে মার্কিন এজেন্টরা বৈঠক করে ইরানের সরকারের পতন হলে পরবর্তী শাসনব্যবস্থা কে চালাবে, তা নিয়ে আলোচনা করেছিল।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো ইরানকে ওয়াশিংটনের আনুগত্যে বাধ্য করা। তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধ ইরানকে দুর্বল করেনি, বরং আরও শক্তিশালী করেছে। খামেনি বলেন, জনগণ সেনাবাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পাশে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
তিনি সতর্ক করেন, বাইরের শক্তিগুলো এখন ভেতর থেকে ইরানকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। আমেরিকা ও ইসরায়েলের এজেন্টরা সমাজে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে আল্লাহর কৃপায় আজ ইরান ঐক্যবদ্ধ, আর জনগণ দেশের স্বার্থে ও শত্রুর বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে। এরপর থেকে ওয়াশিংটন ইরানের ওপর একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, বিশেষ করে পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। যদিও ইরান বারবার জানিয়েছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।
সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ দফা স্থগিত হয়েছিল। তবে আগামী মঙ্গলবার ইরান ইউরোপের তিন দেশ—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে আলোচনায় বসবে। ইউরোপীয় দেশগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কোনও চুক্তি না হলে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।