
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘মাই টিভি’ ঘিরে উঠেছে নানা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে, কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক অপকর্মের তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির দাবি, বাবা-ছেলের অবৈধ কর্মকাণ্ড ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই চলছে। বিশেষ করে কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপির সহযোগিতায় প্রভাব খাটিয়ে ‘মাই টিভি’ দখলের ঘটনাটিই এখন তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
তদন্তে আরও জানা যাচ্ছে, অবৈধ উপায়ে প্রভাবশালী হয়ে ওঠা এই বাবা-ছেলে দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল অর্থসম্পদ অর্জন করেন। নাসির উদ্দিন সাথী বিভিন্ন সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিতেন। আর তাঁর ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেপরোয়া জীবনযাপন করতেন। কখনো রাত-বিরাতে মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে চলাফেরা, কখনো তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা, আবার কখনো বিপুল অর্থের বিনিময়ে শোবিজের উঠতি নায়িকাদের নিয়ে ভোগ-বিলাসে মেতে উঠতেন। বিদেশ সফরে আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ অপরাধীদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল।
তবে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তাঁদের সব কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়ে যায়। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন বাবা-ছেলে।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, নাসির উদ্দিন সাথী আসলে মাই টিভির প্রকৃত মালিক নন। প্রতিষ্ঠাতা বিলকিস জাহানের কাছ থেকে জালিয়াতি ও পেশিশক্তির মাধ্যমে চ্যানেলটি দখল করেন তিনি। সাবেক সরকারের কিছু প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজের অবস্থান শক্তিশালী করেন। বাবার প্রভাবে আফ্রিদিও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।
জিজ্ঞাসাবাদে আফ্রিদি জানিয়েছেন, টিভি চ্যানেল দখলের বিষয়টি তাঁর জানা নেই, বিষয়টি তাঁর বাবাই জানেন। তবে সিআইডির হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলছে এবং তা যাচাই-বাছাই চলছে। এসব প্রমাণিত হলে নাসির উদ্দিন সাথী ও তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ একাধিক মামলা করা হবে।