
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষ্য দেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে তিনি জানান, প্রশাসনের লোকজন মৃতদেহ রাতেই দাফনের জন্য চাপ দিয়েছিল, কিন্তু পরিবার রাজি না হওয়ায় পরদিন সকালে দুইবার জানাজা শেষে আবু সাঈদের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সাক্ষ্যে মকবুল হোসেন আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের ১৬ জুলাই দুপুরে আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। খবর শুনে মাথায় আসমান ভেঙে পড়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে দেখেছি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে। প্রথমে পুলিশ দেখাতে দেয়নি, পরে আমার ছেলে ও জামাইয়ের চাপে দেখানো হয়।”
মকবুল হোসেন বলেন, দাফনের সময় লাশের মাথার পেছন ও বুকে গুলির চিহ্ন ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে গুলি করেছে এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র। হত্যার কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগ নেতা পমেল বড়ুয়া ছেলের সঙ্গে সহিংস আচরণ করেছিলেন।
ছেলের প্রতি শোক এবং বিচার চাওয়ার দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করে মকবুল হোসেন বলেন, “আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। আশা করব, আমার মৃত্যুর আগে যেন ছেলে হত্যার বিচার দেখতে পারি।” তিনি আরো বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদেরও বিচার চান তিনি।
এরপর জেরা শুরু হয় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের দ্বারা। একই দিনে সাক্ষ্য দেন এনটিভির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এ কে এম মঈনুল হক। মামলার কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে ট্রাইব্যুনাল আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি রাখে।