
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা নুরুল হক নুরসহ অর্ধশতাধিক জুলাই যোদ্ধার ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জুলাই ঐক্যের সহযোগী ১০১টি সংগঠন। তারা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে—এ ধরনের হামলা অবিলম্বে বন্ধ না হলে সারাদেশে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক মিছিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বিচার হামলা চালায়। এতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ বহু নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
যৌথ বিবৃতিতে ১০১ সংগঠন জানায়—
“গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও বাহিনী সংস্কারের প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। আজ সেই সংস্কারের অভাবেই জনগণ ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করছে। জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা মানেই জুলাই স্পিরিটকে অস্বীকার করা। যারা জুলাই স্পিরিটের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাদের পরিণতিও খুনি হাসিনার মতোই হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার এ সময় জনগণ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও গণতান্ত্রিক চর্চা আশা করেছিল। অথচ সেনা ও পুলিশ সদস্যদের অমানবিক মব-হামলা জাতিকে ফ্যাসিবাদের অন্ধকার দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এটি ন্যক্কারজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
সংগঠনগুলো এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে—“যদি আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সামরিক বাহিনীকে মব হিসেবে ব্যবহার করা হয়, জনগণ বাধ্য হবে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের পুনর্জন্ম হতে দেওয়া হবে না।”
বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে সংগঠনগুলো বলেছে, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে গণবিরোধী ভূমিকা পালন করেছে। আজ তাদের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নুরসহ আন্দোলনকারীদের রক্তাক্ত হতে হয়েছে। আমরা অবিলম্বে জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই।”
১০১ সংগঠনের নেতারা বলেন—“যদি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনে আবারও সেনা-মব নামানো হয়, আমরা সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না।”
যৌথ বিবৃতিদানকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে: আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই রেভলুশনারি অ্যালায়েন্স, জুলাই রেভলুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স, পুনাব, পুশাব, নেক্সাস ডিফেন্স, সাধারণ আলেম সমাজ, জাগ্রত জুলাই, বাংলাদেশ কওমি ছাত্রসংগঠন (কছাস), বৈষম্যবিরোধী কওমি ছাত্র আন্দোলন, জুলাই ছাত্রজনতা সংসদ, জেন-জি স্টুডেন্ট ইউনিটি, সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক (ঢাবি), রাইজিং ইয়ুথ রামপুরা, পিপলস রিফর্ম অ্যালায়েন্স, তরুণ, বাংলাদেশ রিপাবলিকান, অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনসহ আরও বহু সংগঠন।