
চীনে প্রথমবার একই দিনে বেইজিংয়ে উপস্থিত হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। মঙ্গলবার সকালে পুতিন বেইজিং পৌঁছান এবং রাজধানীতে তার গাড়িবহরকে দেখতে পাওয়া যায়। তাকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সাদরে স্বাগত জানান এবং ‘পুরোনো বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে নিয়ে যান। সেখানে এক আলোচনা শেষে শি তাকে নিজের ব্যক্তিগত বাসভবনে নিয়ে যান। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিম জং উনকে বহনকারী ট্রেন বেইজিংয়ে পৌঁছায়।
আজ বুধবার চীন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ বছর পূর্তিতে এক বিশাল কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছে। এই কুচকাওয়াজে চীনের সব সামরিক বাহিনী অংশ নেবে এবং নিজেদের সর্বাধুনিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন করবে। পুতিন ও কিম এই আয়োজনে অংশ নিতে বেইজিং পৌঁছেছেন এবং তারা শি জিনপিংয়ের পাশে মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন। কিমের জন্য এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন একটি বড় মঞ্চে প্রথমবার উপস্থিত হওয়ার সুযোগ।
বিশ্লেষকরা দেখছেন, এই সময় এই তিন নেতা একত্রিত হওয়ার পেছনে পশ্চিমা প্রভাব হ্রাস ও বিশ্বব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্য প্রতিফলিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি এবং পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই এই সমন্বয় নজর কাড়ছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ইতিপূর্বে প্রতিরক্ষা সম্পর্কের চুক্তি রয়েছে; সেই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়ার সেনারা অংশগ্রহণ করেছে। এবার যদি পিয়ংইয়ং চীনের সঙ্গে একই ধরনের সম্পর্ক গড়ে তোলে, তবে তা এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যেও প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে শি জিনপিং গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। চীন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ক্রয় করে, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, চীন ও ভারত রাশিয়ার তেল ক্রয় করে ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধ চালানোর সহায়তা করছে। তবে ভারত জানিয়েছে, তাদের দেশীয় স্বার্থের কারণে তেল কিনছে।
পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের পর রাশিয়ার গ্রাজপ্রম ও চীনের ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন পাইপলাইন স্থাপন করে চীনের জন্য আগামী ৩০ বছর তেলের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা হবে।