স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন ঘিরে চলছে নাটকীয়তা ও আইনি দড়ি টানাটানি। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
তফসিল অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টায় বোর্ড পরিচালক পদে ভোটের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এরপর পরিচালনা পর্ষদের সভায় নির্বাচিত হবেন বিসিবির নতুন সভাপতি ও দুই সহসভাপতি। রাত ৯টার দিকে এই তিনটি পদের ফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
🔹 ভোটের আগেই নির্ধারিত ফলাফল?
বলা হচ্ছে, নাটকের মূল দৃশ্যপট তৈরি হয় গত ৩ অক্টোবর গভীর রাতে বনানীর হোটেল শেরাটনে। সেখানে এক নিরিবিলি কক্ষে ভোটের ৯৫ শতাংশই পড়ে যায় বলে সূত্র জানিয়েছে। অর্থাৎ, আনুষ্ঠানিক ভোটের আগেই প্রভাবশালী প্যানেল জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল।
তবে রবিবার আদালতের নির্দেশে নতুন মোড় নেয় নির্বাচন। হাইকোর্টের রায়ের ফলে যেসব ১৫ ক্লাবের ভোটাধিকার বাতিল ছিল, আপিল বিভাগের নির্দেশে তারা আবার ভোটাধিকার ফিরে পায়। এতে পরিচালক পদের লড়াইয়ে তৈরি হয় নতুন অনিশ্চয়তা।
🔹 ক্যাটাগরি–২: ক্লাব কোটা নিয়ে তুমুল লড়াই
ক্লাব ক্যাটাগরিতে (ক্যাটাগরি–২) ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে নির্বাচিত হবেন ১২ জন। তামিম ইকবালসহ কয়েকজন সরে দাঁড়ানোয় টিকে আছেন ১৬ জন। তবে আদালতের রায়ের পর ভোটের ভারসাম্য পাল্টে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই ক্যাটাগরিতে আলোচনায় রয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠু, যিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন এবং হাতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভোট। অপরদিকে লুৎফর রহমান বাদল সরে দাঁড়ালেও নাম রয়েছে ব্যালটে, ফলে তিনিও জিতে যেতে পারেন।
অন্যদিকে, রাকিব উদ্দিন ও একেএম আহসানুর রহমান মল্লিক রনি নিজেদের প্যানেলকে জেতাতে নামমাত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নিচ্ছেন। শনিবার রাতে মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
🔹 আইনি নাটক ও অভিযোগের পাল্টাপাল্টি
নির্বাচনের আগে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ এবং পরে আপিল বিভাগের শুনানি নিয়ে চলছিল টানাপোড়েন। অবশেষে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ঘোষণা দেন— “নির্বাচনে আর কোনো স্থগিতাদেশ থাকছে না, নির্বাচন হোক।”
তবে ক্লাব সংগঠকদের একাংশ নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ— বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করছেন।
প্রত্যুত্তরে আমিনুল ইসলাম বলেন, “ক্রীড়া উপদেষ্টা আমাকে সাহায্য করেছেন, কোনো প্রভাব খাটাননি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে।”
🔹 ক্যাটাগরি–১ ও ৩: কিছু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়
জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা (ক্যাটাগরি–১) থেকে নির্বাচিত হবেন ১০ পরিচালক। এর মধ্যে ছয়জন আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন—
খুলনা বিভাগ: আবদুর রাজ্জাক, জুলফিকার আলী খান
বরিশাল বিভাগ: শাখাওয়াত হোসেন
সিলেট বিভাগ: রাহাত সামস
চট্টগ্রাম বিভাগ: আসিফ আকবর, আহসান ইকবাল চৌধুরী
অন্যদিকে ক্যাটাগরি–৩ এ লড়াই হচ্ছে খালেদ মাসুদ পাইলট ও দেবব্রত পালের মধ্যে। এখানে মোট ভোট ৪৫টি, এর মধ্যে পোস্টাল ভোট ৫টি।
বাকি দুই পরিচালক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত হবেন।


