আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় ইসরাইলের অবৈধ নৌঅবরোধ ভাঙতে যাওয়া আন্তর্জাতিক নৌবহর “ফ্রিডম ফ্লোটিলা”-র সব নৌযান আটক করেছে ইসরাইলি নৌবাহিনী। এতে থাকা বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমও ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার সমুদ্রবন্দর ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করা ফ্লোটিলার সব জাহাজ এবং যাত্রীদের আটক করে বর্তমানে একটি ইসরাইলি বন্দরে নেওয়া হয়েছে। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের আরেকটি অবৈধ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আটক যাত্রীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন, শিগগিরই তাদের বহিষ্কার করা হবে।”
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের আয়োজিত এই নয়-জাহাজের অভিযানে অন্তত ১০০ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী ছিলেন। তাদের মধ্যে একটি জাহাজের নাম ‘কনসিয়েন্স’ (Conscience), যা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয়।
কনসিয়েন্সের আয়োজকরা জানান, তাদের জাহাজ ইসরাইলি সামরিক হেলিকপ্টারের আক্রমণের শিকার হয়েছে। অন্য আটটি জাহাজও আটক ও জব্দ করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরাইলি নৌবাহিনী জাহাজগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে।
ফ্লোটিলার জাহাজগুলোতে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলারের ওষুধ, শ্বাসযন্ত্র ও পুষ্টিসামগ্রীসহ গাজার হাসপাতালের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা ছিল।
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) এর আগেও একাধিকবার গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে অভিযান পরিচালনা করেছে। সম্প্রতি গাজামুখী ৪০টিরও বেশি নৌকা আটক করেছে ইসরাইল, যাতে প্রায় ৪৫০ জন কর্মী ছিলেন।
প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজা উপত্যকায় অবরোধ বজায় রেখেছে ইসরাইল। চলতি বছর মার্চে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অবরোধ আরও কঠোর করা হয়, ফলে অঞ্চলটি ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। অব্যাহত বোমাবর্ষণে গাজা এখন কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।


