ভারতে হিন্দু কমছে, মুসলিম বাড়ছে: অনুপ্রবেশকেই দায়ী করলেন অমিত শাহ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির “হিন্দু কমছে, মুসলিম বাড়ছে” মন্তব্যের পর এবার সেই সুরেই সুর মিলিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি দাবি করেছেন, অনুপ্রবেশের কারণেই ভারতে হিন্দুদের সংখ্যা কমছে এবং মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন, “এদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমার নেপথ্যে ধর্মীয় কারণ নয়, বরং অনুপ্রবেশই দায়ী। অন্যদিকে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ জন্মহার নয়, বরং বিপুলসংখ্যক অনুপ্রবেশকারী।”
তিনি আরও দাবি করেন, “দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমেছে ৪.৫ শতাংশ। এটি ধর্মীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত নয়, বরং সীমান্তপারের অবৈধ অনুপ্রবেশের ফল।”
অমিত শাহ বলেন, ১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি আদমশুমারিতে এই বৈষম্য স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। তিনি জানান, অনুপ্রবেশ রোধে কেন্দ্র সরকার তিন ধাপে ব্যবস্থা নিয়েছে—অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা, ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলা এবং শেষে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
তবে শাহের এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের উত্তর প্রদেশ সভাপতি অজয় রাই বলেন, “দেশজুড়ে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা অবনতির মতো সমস্যাগুলো ঢাকতে বিজেপি জনসংখ্যা ও ধর্মের ইস্যু তুলছে।”
অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি শাহের মন্তব্যকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “প্রথম আদমশুমারি থেকে ২০১১ পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৪.৪ শতাংশ বেড়েছে, শাহের দাবি ২৪.৬ শতাংশ সম্পূর্ণ ভুল। তার গণিত দুর্বল।”
ওয়াইসি আরও বলেন, “যদি কোথাও ১০ জনের মধ্যে ১০ জন নতুন আসে, সেটি শতভাগ বৃদ্ধি দেখায়, কিন্তু তার মানে এই নয় যে পুরো দেশের চিত্র বদলে গেছে।”
এর আগে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি একই ইস্যু তুলে ধরে ভারতের ‘ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তন’-এর বিষয়ে সতর্কতা জানিয়েছিলেন। ফলে রাজনৈতিক মহলে এ ইস্যু নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিরোধীদের দাবি, বিজেপি ২০২৬ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ধর্মীয় বিভাজন উসকে দিতে এই বক্তব্য ব্যবহার করছে, অন্যদিকে কেন্দ্র বলছে—“দেশের নিরাপত্তা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ অপরিহার্য।”


