অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ বিএনপির, শিগগিরই সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ
একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের উচিত নিজেদের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ রাখা—এমন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের নেতারা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এখনই নিজেদের চরিত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে দাঁড় করানো, যাতে প্রশাসন ও সরকারের কার্যক্রমে শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় থাকে।
সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরলে বিএনপি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। পাশাপাশি দুই-এক দিনের মধ্যেই স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনে সাম্প্রতিক পদায়ন ও রদবদলে পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং জামায়াতপন্থি কর্মকর্তাদের প্রাধান্য নিয়েই সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতারা। তাদের অভিযোগ, মাঠপর্যায়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরিতে জামায়াতের প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এক স্থায়ী কমিটির সদস্য যুগান্তরকে বলেন, “কিছু উপদেষ্টার বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড সরকারের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করছে। তারা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পক্ষপাতমূলকভাবে জামায়াতপন্থি কর্মকর্তাদের বসাচ্ছেন।”
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, এতে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের বদলে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষের লোকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শিগগিরই বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানাবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাবে।
এছাড়া বৈঠকে জুলাই সনদ নিয়েও আলোচনা হয়। বিএনপি জানিয়েছে, তারা সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত এবং আগামী ১৭ অক্টোবর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এতে স্বাক্ষর করবেন।
বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বিএনপি নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা এমন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন, যা তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তারা চান না সরকার তাদের নিরপেক্ষ অবস্থান হারাক বা এ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিক।
বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন, যেহেতু ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, তাই এখনই সরকারের উচিত নিজেদের কার্যক্রম ও গঠন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ রূপে সাজানো।
ফোকাস কীফ্রেজ:


