বাজারে একটি তালার দাম মাত্র ১৭৩ টাকা, কিন্তু সেটিই কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়—এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শুধু তালাই নয়, ২৬০ টাকার বালতি কেনা হয়েছে ১,৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশি ৪১৫ টাকায়, আর ৯৮ টাকার ঝাড়ু কেনা হয়েছে ১,৪৪০ টাকায়।
এ ঘটনায় বুধবার ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছে দুদক। এর মধ্যে রয়েছেন পশ্চিম রেলের সাবেক দুই মহাব্যবস্থাপক (খোন্দকার শহিদুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান)সহ আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহীতে সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ২ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তদন্তে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বাজারদরের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি দামে বিভিন্ন পণ্য কিনেছেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস এই অনিয়মের প্রমাণ পান।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী—
১৭৩ টাকার তালা কেনায় দুর্নীতি হয়েছে ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা
২৬০ টাকার বালতি কেনায় আত্মসাৎ ১৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা
ভিআইপি পর্দা কেনায় ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা
লাগেজ ফিতা, ট্রলি, চেয়ারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনায় লুট হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকারও বেশি
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রাক্কলন কমিটি বাজার যাচাই না করেই ১৫–৩৩ গুণ বেশি দর নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করে। মাত্র ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয় এবং তারাই কাজ পায়। অনুমোদনকারী কর্মকর্তা অনিয়ম জানার পরও দরপত্র বাতিল না করে অনুমোদন দেন।
দুদক বলছে, প্রাক্কলন কমিটি, মূল্যায়ন কমিটি, অনুমোদনকারী কর্মকর্তা ও ঠিকাদাররা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এই ঘটনায় দুদক কঠোর তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর


