চট্টগ্রাম বন্দরে ৪১ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধি কার্যকর করার প্রতিবাদে ব্যবসায়ী ও পরিবহণ শ্রমিকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। বিদেশিদের সুবিধা দিতে এই ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে কেবল চট্টগ্রাম নয়, পুরো দেশের মানুষকে পণ্যের দামে বাড়তি খরচ বহন করতে হবে।
ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রেইলর ও প্রাইম মুভারের প্রবেশ ফি আগে ৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০ টাকা হয়েছে। এর প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে প্রাইম মুভার মালিক ও শ্রমিকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না। বিকালে সংবাদ সম্মেলনে পণ্য পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে, রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চালানো হবে।
চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এতে ট্যারিফ স্থগিত করা ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যৌক্তিক ট্যারিফ নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আমিরুল হক বলেন, প্রবেশ ফি পাঁচগুণ বেড়ে যাওয়ায় ড্রাইভার ও মালিকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে এ ধরনের বৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি।
বিজিএমইএ নেতা এমএ সালাম এবং পরিচালক এসএম আবু তৈয়ব বলেছেন, বন্দরের আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকার লাভ থাকা সত্ত্বেও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এই ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ট্রেইলর মালিক সমিতির সভাপতি মোরশেদ হোসেন নিজামী জানান, ধর্মঘটের কারণে পণ্য পরিবহণ সর্বস্থরে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বন্দরে প্রায় ৪৬ হাজার কনটেইনারের জট সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলম বলেন, এই অযৌক্তিক ট্যারিফ বৃদ্ধির ক্ষতি সারা দেশের মানুষের ওপর পড়বে। তাই সরকারকে ট্যারিফ পুনর্বিবেচনা করতে হবে, নতুবা কঠোর কর্মসূচি চালানো হবে।
ধর্মঘটের কারণে পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকায় বন্দরে খালাস বন্ধ রয়েছে, যা দেশের ব্যবসায় ও আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে। মালিক-শ্রমিকরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার ও বন্দরের কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনা করে গ্রহণযোগ্য সমাধান না দেবেন, ততক্ষণ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।


