অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো প্রণয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। সরকারের লক্ষ্য চলতি মেয়াদেই জাতীয় বেতন স্কেল গেজেট আকারে প্রকাশ করা এবং তা আগামী বছর থেকে কার্যকর করা। ইতোমধ্যে জাতীয় পে কমিশন গঠিত হয়েছে এবং কমিশন ডিসেম্বরের মধ্যে সুপারিশ জমা দেবে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ সূত্র।
নতুন বেতন কাঠামোয় শুধু বেতন বাড়ানোই নয়, বরং ভাতা ও বিভিন্ন সুবিধা পুনর্বিন্যাস করার বড় সংস্কার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ‘সাকুল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক’ কাঠামো চালু করা হতে পারে, যেখানে আলাদা করে কোনো ভাতা থাকবে না। এর ফলে বর্তমানে চালু থাকা নিম্নোক্ত সুবিধাগুলো বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে—
যে সুবিধাগুলো বাতিল হতে পারে:
প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও সভায় অংশগ্রহণের সম্মানি
চিকিৎসা ভাতা
শিক্ষা ভাতা
বিশেষ দায়িত্ব ভাতা
অতিরিক্ত সম্মানি ভাতা
বিভিন্ন প্রশাসনিক খাতে অতিরিক্ত সুবিধা
জাতীয় পে কমিশনের প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধরনের ভাতা বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে নৈতিকতার বাইরে গিয়ে অপব্যবহার হচ্ছে। শুধু সভা ও প্রশিক্ষণের নামে বছরে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হয় বলে হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে। কমিশনের মতে, বেতন কাঠামো সুশৃঙ্খল করতে এই ভাতা বাতিল প্রয়োজন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, “পে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে অতিরিক্ত অর্থ লাগলেও তা সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। ডিসেম্বর থেকেই বাজেট সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই নতুন জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হতে পারে।”
এদিকে, নতুন কাঠামোয় সর্বনিম্ন বেতন ২৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব জমা দিয়েছে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি। এই প্রস্তাব নিয়ে আজ পে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবে সংগঠনটি।
সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে আলোচনা এখন প্রশাসনিক মহল ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। তবে অনেকেই ভাতা বাদ দেওয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।


