ইউক্রেন–রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ থামাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শর্ত মেনে নিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতি নয় বরং আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের ইতি টানতে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘সমঝোতার পথে হাঁটার’ পরামর্শ দিয়েছেন বলে ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক একাধিকবার উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে রূপ নেয়। বৈঠকে চিৎকার-চেঁচামেচি পর্যন্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে আলোচনায় যুক্ত কর্মকর্তাদের বরাতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। ট্রাম্প নাকি জেলেনস্কিকে সতর্ক করে বলেছেন—
“আপনি যদি আপস করতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে রাশিয়া ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেবে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বৈঠকে ট্রাম্প একাধিকবার পুতিনের বক্তব্য তুলে ধরে জেলেনস্কিকে পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছেন। ট্রাম্পের দাবি, এই ছাড় দিলে যুদ্ধ দ্রুত থামানো সম্ভব।
এক ইউরোপীয় এক কর্মকর্তা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন—
“ট্রাম্প বারবার বলেছেন, পুতিন এই সংঘাতকে কোনো যুদ্ধ মনে করেন না, এটি তার জন্য শুধু একটি বিশেষ সামরিক অভিযান।”
এমনকি এক পর্যায়ে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের মানচিত্র দেখে বিরক্ত হয়ে তা একপাশে সরিয়ে রেখে বলেন—
“এই রেড লাইনগুলো কোথায় আমি জানি না, আমি কখনো ওগুলো দেখি না।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইউক্রেন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যেও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে এলেও ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই সহায়তা সংকুচিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
এ বিষয়ে এখনো রাশিয়া বা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ট্রাম্পের এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


