চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা মামলার বিচার প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “এই বিচারে আমরা যা প্রমাণ করেছি, সেটা সন্দেহাতীত।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে দেওয়া সমাপনী বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলা প্রমাণের জন্য দালিলিক, মৌখিক এবং সারকামস্টেনশিয়াল সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। কিন্তু আসামিপক্ষ দাবি করেছে, তারা কোনো নির্দেশ দেননি এবং নির্দোষ। বাংলাদেশের ১৪শ মানুষ নিহত হয়েছে, ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছে—এই ফ্যাক্টগুলো অস্বীকার করা যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “অপরাধ কে বা কারা করেছে, কিভাবে করেছে—এটি প্রসিকিউশনের উপস্থাপন করা সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। অভিযুক্তরা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এই বিচারে তাদের দায়িত্বর প্রমাণ সন্দেহাতীত।”
অ্যাটর্নি জেনারেল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা না হলে দেশের সাধারণ মানুষকে তা প্রভাবিত করবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা যদি এই বিচার শেষ করতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের আস্তাকুড়ে একটি ভীরু কাপুরুষের উপমা হয়ে রয়ে যাবে।”
সব পক্ষের বক্তব্য শেষে ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৩ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন। পলাতক শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল মামুনের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ও অন্যান্য আইনজীবীরা শুনানি পরিচালনা করেন।
মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন, যাদের মধ্যে শহীদ আবু সাঈদের পরিবার এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান রয়েছে।
মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনা, অন্যটি শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত।


