প্রশান্ত মহাসাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী একটি নৌকায় মার্কিন সেনাবাহিনীর হামলাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও কলম্বিয়ার সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত করে তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি প্রকাশ্যে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোকে ‘পাগল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কো রুবিও বলেন,
“আমার মনে হয় কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনী ও পুলিশ এখনো প্রো-আমেরিকান। কিন্তু সেখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে একজন পাগল প্রেসিডেন্ট।”
তিনি আরও বলেন,
“ওই লোকটা পুরোপুরি মানসিকভাবে অস্থিতিশীল। তার সিদ্ধান্তগুলো বিপজ্জনক এবং তা কেবল কলম্বিয়া নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।”
রুবিওর এমন বক্তব্যের পর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন আরও বৃদ্ধি পায়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একই ইস্যুতে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেত্রোকে ‘গুন্ডা’ বলে উল্লেখ করেন এবং সরাসরি অভিযোগ করেন যে পেত্রো নিজেই মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
ট্রাম্প বলেন,
“পেত্রো কলম্বিয়াকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছেন। তিনি নিজে মাদক কার্টেলদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বলেই মনে হয়।”
এমন কঠোর মন্তব্যের জবাবে প্রেসিডেন্ট পেত্রো জানান, তিনি অপমানিত বোধ করেছেন এবং আইনি পদক্ষেপ নেবেন। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,
“আমি যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীদের সাহায্যে নিজেকে আইনি প্রক্রিয়ায় রক্ষা করব।”
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা কলম্বিয়াকে দেওয়া সামরিক সহায়তা বন্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরে একটি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালায়। এতে ৫ জন নিহত হয়। কলম্বিয়া এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করলে দুই দেশের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়, যা এখন কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে রূপ নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি দ্রুত কূটনৈতিক সমাধানের পথে না গেলে ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন প্রভাব আরও হ্রাস পেতে পারে। একই সাথে মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।


