আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে, যেখানে প্রায় এক লাখেরও বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনি আইনে সংস্কার করে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে তারা পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
তবে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার বা বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার দাবি উঠেছে। অতীতের জাতীয় নির্বাচনে সেনা দায়িত্ব পালন করলেও তাদের হাতে বিচারিক ক্ষমতা ছিল না। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হলেও সেনাবাহিনীকে আলাদা বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার এখতিয়ার ইসির কাছে নেই।
বিচারিক ক্ষমতা থাকলে সেনা কর্মকর্তারা গ্রেফতার, স্বল্পমেয়াদী সাজা বা প্রয়োজন অনুযায়ী তল্লাশি ও অভিযান পরিচালনা করতে পারবেন। ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনে সেনাবাহিনী ভোটকালীন দায়িত্ব পালন করেছে, তখনও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা তাদের হাতে ছিল। ২০০২ সালের অপারেশন ক্লিনহার্টেও সেনাবাহিনী বিশেষ ক্ষমতায় দায়িত্ব নিয়েছিল।
সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভোটকালীন সময় পুলিশ অনেকক্ষেত্রে দুর্বল অবস্থায় থাকে। বিচারিক ক্ষমতা না থাকলে সশস্ত্র বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারবে না। এটি নির্বাচনের মাঠ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংশোধিত আরপিওতে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তারা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে, তবে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া আইনিভাবে সরকারের এখতিয়ার।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সেনাবাহিনী আগেই বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। ভোটকালীন সময়ে ক্ষমতা না থাকলে কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে, নির্বাচন সুস্থ ও প্রতিযোগিতামূলক হলে আগাম বিচারিক ক্ষমতার প্রয়োজন নেই।
সর্বশেষ, নির্বাচন কমিশন বলেছে, আইন অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার সরকারের অনুমোদন ছাড়া অন্য কোনো সংস্থার দিতে পারবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচনের সময় প্রয়োজন হলে সরকার এই ক্ষমতা প্রদান করতে পারে।


