দিনাজপুরের কেরী মেমোরিয়াল হাইস্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে খাদ্য অধিদপ্তরের ‘উপ-খাদ্য পরিদর্শক’ পদের লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে কৃষ্ণকান্ত রায় নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। তার কাছ থেকে দুটি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। একটি ক্ষুদ্রাকৃতির গোল ডিভাইস তার কানের ভেতরে বিশেষ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল, আর অন্যটি স্যান্ডো গেঞ্জির সঙ্গে লুকানো ছিল।
পরিদর্শকরা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরপরই দিনাজপুর শহরের কসবা এলাকার কেন্দ্র থেকে কৃষ্ণকান্তকে আটক করা হয়। তিনি বিরল উপজেলার সিঙগুল পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্নাতক শেষ করা এই চাকরিপ্রার্থী শহরের ফকিরপাড়া এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার হলে সবাই লিখতে ব্যস্ত থাকাকালীন কৃষ্ণকান্ত বেশ কয়েকবার কাশি দেন, যা অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় সন্দেহ করা হয়। তল্লাশির সময় তার কাছ থেকে ডিভাইস দুটি উদ্ধার হয়। ডিভাইসের এক প্রান্ত থেকে তাকে বলা হত, প্রশ্নপত্রের সেট নম্বর ‘পদ্মা’ হলে কাশি দিতে। কাশি দেওয়ার সময়ই ধরা পড়েন কৃষ্ণকান্ত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে ঢাকার একটি চক্র জড়িত। তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষা শুরুর মাত্র এক থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে চক্রের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র চলে আসত। শহরের ফকিরপাড়া ও সুইহারি এলাকায় কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা উত্তর প্রস্তুত করতেন এবং ডিভাইসের মাধ্যমে তিনি প্রশ্নের সেট নম্বর জেনে উত্তর চিহ্নিত করতেন।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, “এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে বড় চক্র জড়িত থাকতে পারে। পুরো চক্র ধরতে পুলিশসহ অভিযান চলছে। কৃষ্ণকান্তকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।”
রংপুরে প্রোক্সি পরীক্ষার্থীর কারাদণ্ড
রংপুরে খাদ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক পরীক্ষায় প্রোক্সি দেওয়ার অভিযোগে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রববানী এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তিনি রাহাদুজ্জামান সুজনের পরিবর্তে পরীক্ষা দিতে আসেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মাহবুবে সোবহানী রংপুরের সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে এই আদেশ দেন।
সমগ্র রংপুরে ৪৬টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৫০,৭৭৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রোক্সি পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে খাদ্য বিভাগের কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
দুইটি ঘটনায় প্রশাসন বলেছে, জালিয়াতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।


