মালয়েশিয়ায় নতুন কর্মী পাঠাতে কড়াকড়ি শর্ত ঘোষণা, আবেদন করতে হবে ৭ নভেম্বরের মধ্যে
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় নতুন করে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্থবির থাকা কর্মী প্রেরণের সুযোগ পুনরায় উন্মুক্ত হলেও এবার আগের মতো নয়, বরং কঠোর ও বাছাই করা মানদণ্ড পূরণ করতে হবে রিক্রুটিং এজেন্টদের। মালয়েশিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে যে নতুন রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া প্রকাশ করেছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকেও প্রতিষ্ঠিত ও দক্ষ এজেন্ট নির্বাচন করা হবে।
বুধবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ–মালয়েশিয়া তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে দুই দেশ কর্মী প্রেরণ নীতিতে নতুন সমঝোতায় পৌঁছায়। বৈঠকে মালয়েশিয়া স্পষ্ট করে জানায়—বাংলাদেশের মতো কর্মী রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য তাদের নীতিতে সমতা বজায় রাখা হবে। এজন্যই নতুন মানদণ্ড প্রণয়ন করে বাংলাদেশ সরকারকে তা অবহিত করা হয়েছে।
নতুন শর্তে যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে
মালয়েশিয়ার পাঠানো চিঠি অনুযায়ী, বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্টদের নিম্নলিখিত শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে:
-
কমপক্ষে ৫ বছরের কার্যকর রিক্রুটিং অভিজ্ঞতা
-
গত ৫ বছরে ন্যূনতম ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড
-
অন্তত তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর প্রমাণিত অভিজ্ঞতা
-
বৈধ সরকারি রিক্রুটিং লাইসেন্স এবং সদাচরণের সনদ
-
নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র
-
ন্যূনতম ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস
-
আন্তর্জাতিক নিয়োগদাতার কমপক্ষে পাঁচটি প্রশংসাপত্র
-
গন্তব্য দেশের শ্রম আইন মেনে কর্মী প্রেরণের প্রমাণ
এই মানদণ্ড থেকে স্পষ্ট যে, এবার আর কোনো অদক্ষ বা অনুমোদনহীন এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাবে না।
৭ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা এসব শর্ত পূরণে সক্ষম, সেই রিক্রুটিং এজেন্টদের আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। যাচাই–বাছাই শেষে তালিকা প্রণয়ন করে তা মালয়েশিয়া সরকারকে পাঠানো হবে।
সমতার নীতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ
বিগত সময়ে মালয়েশিয়া কর্মী প্রেরণে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকলেও এবার পরিস্থিতি বদলেছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাদের মতে—
“এখন আর কোনো একচেটিয়া সুবিধা থাকছে না। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশের বৈধ ও সক্ষম এজেন্সিগুলোকে সমান সুযোগ দেওয়া হবে।”
সরকার একই সঙ্গে সতর্ক করেছে—কর্মী প্রেরণের নামে অনিয়ম, অতিরিক্ত ফি আদায় বা ভুয়া প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য জনপ্রিয়। নতুন এই সুযোগ আগামী দিনে কর্মসংস্থান বাড়ালেও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য এবার প্রতিযোগিতা হবে কঠিন। দক্ষ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানই কেবল তালিকাভুক্ত হতে পারবে।


