গণভোট ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হবে অর্থহীন: জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
লন্ডন, ৩১ অক্টোবর ২০২৫:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গণভোট ছাড়া জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হলে তা কোনোভাবেই কার্যকর বা অর্থবহ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে লন্ডনে পৌঁছে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন,
“বাংলাদেশে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন কোনোভাবেই কার্যকর হবে না। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র টেকে না, নির্বাচনের অর্থও থাকে না।”
জামায়াত আমির আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে গণভোটই হতে পারে একটি জাতীয় ঐকমত্যের পথ। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই পরবর্তী রাজনৈতিক রূপরেখা নির্ধারণ করা উচিত বলে তিনি মত দেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থান
ডা. শফিকুর রহমান বলেন,
“দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও আপোষহীন। জামায়াত জনগণের অধিকার রক্ষায় মাঠে থাকবে, যেকোনো দমন-নিপীড়নের মুখেও আমরা জনগণের পাশে আছি ও থাকব।”
তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন,
“প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা না হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পূর্ণতা পাবে না। আমরা চাই, ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হোক।”
৭ নভেম্বর প্রসঙ্গে বক্তব্য
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলী প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন,
“আমরা যেকোনো অপরাধের বিরোধী। অপরাধী সে সেনাবাহিনীর সদস্য হোক বা সাধারণ নাগরিক—অপরাধ করলে তাকে অপরাধী হিসেবেই দেখতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি।”
উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, প্রতিনিধি ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম এবং দলের আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জামায়াত আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
এদিকে, জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, ডা. শফিকুর রহমান শনিবার সকালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশগামী ফ্লাইটে রওনা হবেন। দেশে ফিরে তিনি কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার বৈঠকে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতের এই অবস্থান রাজনৈতিক পরিসরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। গণভোটের দাবি মূলত সরকার পরিবর্তনের পর প্রস্তাবিত “জুলাই সনদ” বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখনো গ্রহণ করেনি।
তারা মনে করছেন, গণভোট প্রসঙ্গটি আগামী কয়েক সপ্তাহে রাজনৈতিক আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।


