ঢাকা, ১ নভেম্বর ২০২৫:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সংকট অন্তর্বর্তী সরকারের সৃষ্টি, যা জনগণের সামনে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় এসব মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

“গণভোটের কোনো সুযোগ নেই”

মির্জা ফখরুল বলেন,

“জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই। এই সংকট অন্তর্বর্তী সরকারই তৈরি করেছে। তারা জনগণের সামনে মিথ্যা বলছে, বিভ্রান্ত করছে। জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা বন্ধ করুন।”

তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকৃত করতে চায়, কিন্তু তা কখনো সম্ভব নয়।

“একাত্তরকে ভুলিয়ে দিতে চায় কিছু মহল, কিন্তু একাত্তরেই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যারা একসময় মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিল—জাতি তা ভোলেনি,” বলেন তিনি।

“আমরাই সংস্কারের পক্ষে”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে কোনো অপশক্তি মাথা তুলতে পারত না।
তিনি বলেন,

“আমাদের ৩১ দফায় সংস্কারের সব প্রস্তাব স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। পিআর হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত পরবর্তী সংসদ নেবে। পিআর না হলে নির্বাচন হবে না—এই কথাগুলো বলে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।”

তিনি দাবি করেন, বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিক্রিয়া

শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন,

“ভারতে বসে শেখ হাসিনা যেভাবে বিভিন্ন মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, তা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। আমি ভারত সরকারকে অনুরোধ করব, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে দিন—তাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে “ষড়যন্ত্রকারীদের পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার”।

আলোচনা সভায় উপস্থিতি

সভায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বলেন, জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় বিএনপি তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি গণভোট ও নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাইছে, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি করতে পারে।