হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধান, নির্বাচন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
ঢাকা, ১ নভেম্বর ২০২৫: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হলো এক গোপনীয় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনীর প্রধানরা— সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সেনা মোতায়েন পরিকল্পনা এবং নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫ মাসে তিন বাহিনীর সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসামান্য ভূমিকা রেখেছে। এবার জাতীয় নির্বাচনে যেন শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও অবাধ পরিবেশ বজায় থাকে—সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা ও প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তিনি নির্দেশনা দেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে যেন কোনো অরাজকতা বা নিরাপত্তা শূন্যতা না থাকে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন ও বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তিন বাহিনীকে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধানরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, নির্বাচনের সময় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, ২ হাজার ৫০০ নৌবাহিনী সদস্য এবং বিমানবাহিনীর বিশেষ ইউনিট মাঠে থাকবে। প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
তিন বাহিনী প্রধানরা আরও জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ, সংঘাত বা সহিংসতা ঠেকাতে প্রতিটি জেলায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া ইউনিট (QRF) গঠন করা হচ্ছে, যাতে নির্বাচনী দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা যায়।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, “নির্বাচন হবে জনগণের অংশগ্রহণমূলক উৎসব। এ উৎসবকে সুরক্ষিত রাখা আমাদের দায়িত্ব।” তিনি আরও যোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এসময় তিন বাহিনীর প্রধানরা আসন্ন ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানান।
সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর সক্রিয় প্রস্তুতি নির্বাচনের নিরাপত্তা কাঠামোকে নতুন মাত্রা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার এই বৈঠক ইঙ্গিত দিচ্ছে—আগামী নির্বাচনে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষাকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।


