
শায়খ আহমাদুল্লাহ, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন—আমাদের সমাজে সন্তানের সৎ ও নৈতিক আচরণকে যেভাবে অবহেলা করা হয়, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোনো সন্তান বিপদের মুখেও সত্য বলেছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে বা ঘুষ না নিয়ে নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছে—এমন আনন্দে কখনো কোনো বাবা-মা মিষ্টি বিতরণ করেছেন কি? দেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল বলেই মনে হয়। অথচ জিপিএ-৫ পেলেই আনন্দের আতিশয্যে মিষ্টির বন্যা বয়ে দেওয়া যেন রীতি হয়ে গেছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন—প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ঘিরে দেশের যেভাবে উদ্দাম উৎসবে মেতে ওঠে, তা উদ্বেগজনক। ভালো রেজাল্ট নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়, কিন্তু তার উদযাপনও সীমার মধ্যে থাকা উচিত।
তিনি মিডিয়ার ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, পরীক্ষার ফলাফলের দিন দেশের গণমাধ্যমগুলো যেভাবে অতিরঞ্জিতভাবে রিপোর্টিং করে, তা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। এই উন্মাদনা ফলাফল খারাপ করা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপে ফেলে, অপরাধবোধে ভোগায় এবং অনেক সময় তা আত্মহত্যার পথেও ঠেলে দেয়। এর জন্য যেমন মিডিয়া দায়ী, তেমনি সন্তানদের অতিরিক্ত প্রতিযোগিতার মাঝে ফেলে দেওয়া অভিভাবকদেরও দায় রয়েছে।
তিনি মন্তব্য করেন, একটি পরীক্ষায় ভালো করাকে আমরা এমনভাবে দেখাচ্ছি, যেন সেটাই জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। অথচ জীবনের সামগ্রিক সফলতার বিচারে তা শুধুই একটি ছোট অংশ। এই মানসিকতা আমাদের ভোগবাদী, বস্তুনির্ভর এবং পরকাল ভুলে যাওয়া মানুষে পরিণত করছে।
সবশেষে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন—আজকাল অনেক মা-বাবা শুধুমাত্র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াকেই জীবনের মূল লক্ষ্য মনে করেন। এমনকি সন্তানের নকল করাকে সমর্থন করেন। অন্যের খাতা না দেখে পারলে সন্তানকে ভর্ৎসনা করেন। এটি আমাদের সমাজে এক ভয়ংকর মনোবিকৃতি নয় কি?