
‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অবস্থা আরও খারাপ করেছে’ উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, “দেশের অবস্থা শেখ হাসিনা শেষ করে দিয়েছে, আর এই সরকার সেটিকে একেবারে চরমে পৌঁছে দিয়েছে।”
শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, “বলবার মতো অনেক কিছু আছে, কিন্তু আমার অবস্থান থেকে এখন সেগুলো বলা সম্ভব নয়। দেশের কোথায় কীভাবে ক্ষতি হয়েছে, কারা কীভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছে—সব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে, কিন্তু আপাতত আমি তা প্রকাশ করছি না।”
বিএনপিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন অরাজকতার জন্য দায়ী করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “যেখানেই খুন, লুটপাট বা চাঁদাবাজি, সেখানেই বিএনপির নাম জড়ানো হচ্ছে। জনগণের সামনে আমাদেরকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে, কিন্তু আমরা ভালোভাবেই জানি আসল সত্য।”
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আপনারা যেমন ক্ষমতায় যেতে চান, আমরাও চাই। যদি জনগণ ভোট দেয়, আমরা ক্ষমতায় যাবো; না দিলে মেনে নেবো। কিন্তু আমরা সৎভাবে ভোট চাই। এই ভোট আর গণতন্ত্রের জন্য গত ১৭ বছর আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি।”
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল মুখে নির্বাচন চাইলেও অন্তরে তা চায় না, কারণ তাদের ধারণা—নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তাই তারা নির্বাচন ঠেকানোর অজুহাত খোঁজে।
৩৬ দিনের আন্দোলন নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে একবার—১৯৭১ সালে, লাখো শহীদের ত্যাগের বিনিময়ে। এখন যেটা দরকার, তা হলো জুলাই-আগস্টে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে—সে প্রশাসনের লোক হোক, সাধারণ মানুষ হোক, শেখ হাসিনা হোক বা অন্য কেউ—তাদের বিচার নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও বলেন, “বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে। বিচারের আগে নির্বাচন হবে না—এমন কথা বলা উচিত নয়।”
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি অভিযোগ করেন, “ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বন্ধ করার চিন্তা তাদের মধ্যে আছে।”
সভায় জাসাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শওকত আজিজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম, জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক এম এ মালেক, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হেলাল উদ্দীন, গণঅভ্যুত্থানে নিহত মিরাজের বাবা আব্দুর রব মিয়াসহ অনেকে। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাসাসের শিল্পীরা।