ইসরাইল ও হামাস অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এ ঘোষণা দেন, যা মধ্যপ্রাচ্যে এক ঐতিহাসিক মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
চুক্তির মূল ধারা
ট্রাম্প জানান, চুক্তির অধীনে সব জিম্মিকে শিগগিরই মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরাইল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।
প্রথম ধাপে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ২০ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দি ও ২৮ জনের মরদেহ ফেরত দেবে। এর বিনিময়ে ইসরাইল এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেবে।
চুক্তিটি মিশরের শারম-আল-শেখে তিন দিনের পরোক্ষ আলোচনার পর সম্পন্ন হয়। আলোচনায় কাতার, তুরস্ক, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন,
“ইসরাইল ও হামাস উভয়েই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সই করেছে। এটি আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন।”
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন,
“আজ ইসরাইলের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। আগামীকাল আমি সরকারকে আহ্বান করব চুক্তি অনুমোদনের জন্য এবং আমাদের জিম্মিদের ঘরে ফেরাতে।”
হামাস এক বিবৃতিতে কাতার, মিশর, তুরস্ক ও ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইসরাইলকে চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন,
“এটি দুই রাষ্ট্র সমাধানের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান মন্তব্য করেন,
“ট্রাম্প রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখিয়ে ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছেন। আমরা ১৯৬৭ সালের সীমারেখায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাব।”
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান আশা প্রকাশ করেন, চুক্তি গাজাবাসীর মানবিক কষ্ট লাঘবে সহায়ক হবে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন,
“মাসের পর মাসের দুর্ভোগের পর এই চুক্তি আশার আলো।”
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, মস্কো চুক্তির প্রথম ধাপকে সমর্থন করছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রশংসা জানাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন,
“আট দশকের সহিংসতার পর এখনই সময় এই চক্র ভাঙার।”
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানান,
“এই চুক্তি যেন দুই রাষ্ট্র সমাধানের পথে স্থায়ী শান্তির সূচনা হয়।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন,
“এই চুক্তি যুদ্ধের সমাপ্তি ও রাজনৈতিক সমাধানের সূচনা ঘটাবে।”
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন,
“চুক্তির বাস্তবায়ন বিলম্ব ছাড়াই সম্পূর্ণভাবে হতে হবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তার ওপর সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্তব্য করেন,
“ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
সূত্র: আল জাজিরা


