প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, গণতন্ত্র, জাতীয় নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট এবং বাংলাদেশ-জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা জার্মান রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শুভেচ্ছা জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে তার দায়িত্বকালীন সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। জার্মানি ইউরোপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জার্মান বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসুক, অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে আগ্রহী।”
নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আগের চেয়ে বেশি আস্থা দেখাচ্ছে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংলাপ ও ঐক্যবদ্ধ জাতীয় সনদ স্বাক্ষর একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।”
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি জানতে চান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতি কোথায় দাঁড়িয়ে। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটও গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসে। জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সবসময় সহায়তা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি এখন আঞ্চলিক নিরাপত্তার সমস্যা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।”
এছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, প্রযুক্তি সহযোগিতা ও একাডেমিক বিনিময় কর্মসূচির প্রসঙ্গও আলোচনায় উঠে এসেছে। রাষ্ট্রদূত জানান, জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও বৃত্তির সুযোগ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় ভুয়া তথ্য প্রচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভ্রান্ত তথ্য আসন্ন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। সত্য তথ্য যাচাইয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি।”


