রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে খুলে পড়া বিয়ারিং প্যাডের আঘাতে একজন পথচারী নিহত হয়েছেন। নিহত আবুল কালাম, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদারের ছেলে, পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের জলকাঠি এলাকায় বসবাস করতেন।
দুর্ঘটনা ঘটেছে সোমবার দুপুরে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই পিলারের উপরের অংশ থেকে বিয়ারিং প্যাডটি ছিটকে নিচে পড়ে। এ সময় রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন আবুল কালাম। স্থানীয়দের মতে, দুর্ঘটনার পর ফার্মগেট এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের পরিবারকে সহায়তা প্রদান করে। এছাড়া দুর্ঘটনার তদন্তে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেন চলাচল নিরাপদ রাখার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে নিরীক্ষা বাড়ানো হবে।
নিহতের পরিবার, প্রতিবেশী ও স্থানীয় প্রশাসন শোক প্রকাশ করেছে। স্থানীয়রা জানান, আবুল কালাম একজন শান্তমনা ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। তার অকাল মৃত্যু পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর শোক সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, ফার্মগেটে পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার পর মেট্রোরেল পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। দুর্ঘটনার পর পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়, যা আজ সকালের পর থেকে পূর্ণরূপে পুনরায় চালু করা হয়েছে।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, “সকাল ১১টা থেকে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা পুনরায় চালু করা হবে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।” কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পিলার ও বিয়ারিং প্যাডের নিয়মিত পরিদর্শন করা হবে।
এই ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও তদন্তে অংশগ্রহণ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে ফোরেনসিক দল পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিয়ারিং প্যাডটির ঢালাই বা স্থাপনজনিত ত্রুটির কারণে এটি নিচে পড়েছে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর অঞ্চলে মেট্রোরেল অবকাঠামোর নিয়মিত নিরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। পথচারী ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার ঘটনায় যাত্রী, স্থানীয়রা ও পরিবারসহ সকলের মধ্যে শোক ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সবরকম পদক্ষেপ নেবে এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ চালিয়ে যাবে।


