
আজ পবিত্র শুক্রবার— ইসলামে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য এক আধ্যাত্মিক নবজাগরণের দিন, রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের বার্তায় পরিপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“সূর্য উদিত হয়েছে এমন দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এই দিনেই আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে পৃথিবীতে নামানো হয়।” (সহিহ মুসলিম)
শুক্রবারের নামাজ কেবল একটি ধর্মীয় বিধান নয়, বরং মুসলিম ঐক্য ও সামাজিক সংহতির প্রতীক। সাপ্তাহিক এ সমাবেশে আল্লাহর একত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও সমাজের কল্যাণের বার্তা পুনরুজ্জীবিত হয়।
জুমার দিন গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং মসজিদে আগে যাওয়া— এসব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় আমল। তিনি বলেছেন—
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, আগেভাগে মসজিদে যায়, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে ও নামাজ আদায় করে, তার এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (সহিহ বুখারি)
জুমার বিশেষ মুহূর্ত ও দোয়া কবুলের সময়:
জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা যা চায় আল্লাহ তা কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“শুক্রবার এমন একটি সময় আছে, যে মুহূর্তে বান্দা আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করে, তা কবুল করা হয়।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
তাই মুসলমানদের উচিত এই দিনে দোয়া, দরুদ, তিলাওয়াত ও দান-সাদকায় নিজেকে ব্যস্ত রাখা।
দান ও মানবসেবার গুরুত্ব:
জুমার দিনে দরিদ্রদের সহায়তা, খাবার বিতরণ ও সৎকাজে অংশ নেওয়ার সওয়াব অন্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এ দিনকে কেন্দ্র করে সমাজে পারস্পরিক সহানুভূতি ও মানবিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।
পবিত্র জুমা শুধু নামাজের দিন নয়— এটি আত্মশুদ্ধি ও সমাজ সংস্কারের দিন। এই দিনের ফজিলত অর্জনের জন্য প্রয়োজন নামাজে উপস্থিত থাকা, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা, দোয়া করা ও সৎকাজে নিয়োজিত থাকা। কারণ শুক্রবারই সেই দিন, যেদিন আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করেন এবং রহমতের দরজা উন্মুক্ত করেন।